× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

তৃণমূল বিএনপিতে কেন যোগ দিলেন শমসের-তৈমুর

ডে নাইট প্রতিবেদক

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:০৪ পিএম । আপডেটঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৮ পিএম

তৃণমূল বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে সমশের মবিন চৌধুরীকে চেয়ারপারসন ও তৈমুর আলম খন্দকারকে মহাসচিব করা হয়েছে।  মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বেলা সাড়ে ১১ টায় শুরু হয় তৃণমূল বিএনপির জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল। দুপুর পৌনে ১২টায় দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলন শুরু হয়।

কাউন্সিলের স্বাগত বক্তব্যে অন্তুরা হুদা বলেন, আমাদের মাঝে আজকে উপস্থিত আছেন আমার বাবার প্রিয়ভাজন আমার পিতৃতুল্য প্রিয় ব্যক্তিত্ব সমশের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম এবং অপরজন তৈমুর আলম খন্দকার। আমি আনন্দের সঙ্গে উনাদের স্বাগত জানাই। উনাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও অভিভাবকত্বে আমার বিশ্বাস আমাদের দল আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে ইনশাল্লাহ। ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমূল হুদা ‘তৃণমূল বিএনপি’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়। এর তিনদিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান নাজমুল হুদা। তার মৃত্যুর পর ১৬ মে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ব্যারিস্টার অন্তরা হুদা। অনুষ্ঠানে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, প্রগতিশীল ন্যাপ, গণআজাদী লীগ, গণআজাদী লীগ, সনাতন পার্টি, হিউম্যানিস্ট পার্টি, মানবাধিকার আন্দোলন, ইসলামী গণতান্ত্রিক লীগ, জনতা ফ্রন্ট, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় মুক্তি দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর একটি। দলটির প্রতীক সোনালি আঁশ। ইসিতে নিবন্ধিত হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের প্রতীকে ভোট করতে পারবে দলটি। আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফায় খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১২ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিএনএফ নামে নতুন দল গঠন করেন। পরে সেই দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) নামে দুটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন নাজমুল হুদা। এরপর ‘তৃণমূল বিএনপি’ গঠন করেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। কমিশন তখন তাদের নিবন্ধন দেয়নি। পরে দলটি আদালতের দ্বারস্থ হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেয় ইসি। নিবন্ধন পাওয়ার কয়েক দিনের মাথায় নাজমুল হুদা মারা যান। এখন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, তিনি বিএনপির দুঃসময়ে ছিলেন। এখন বিএনপির সুসময়। বিএনপি মনে করে তাঁকে দলের আর দরকার নেই। তাই তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে সমশের মবিন চৌধুরীও যোগ দিচ্ছেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় পররাষ্ট্রসচিব ছিলেন সমশের মবিন চৌধুরী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর ২০০৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসেন ২০০৯ সালে। বিএনপির হয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। ২০১৪ সালের একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন সমশের মবিন চৌধুরী। তখন তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার কথাও বলেছিলেন। তবে এর তিন বছর পর ২০১৮ সালে তিনি বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়েছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।

তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সমশের মবিন চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার ১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদও পেয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি ছিলেন বিএনপির প্রার্থী। শেষ মুহূর্তে দলের সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দেশব্যাপী তখন আলোচনায় এসেছিলেন।

শুধু সমশের মবিন বা তৈমুর আলম খন্দকারই নন, বিএনপির সাবেক নেতাদের আরও অনেকে তাঁদের দলে যোগ দেবেন। তবে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন খন্দকার তৈমুর আলম। তাঁরা এই সিদ্ধান্তের কারণে গত বছরের জানুয়ারিতে তৈমুর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, তিনি বিএনপির দুঃসময়ে ছিলেন। এখন বিএনপির সুসময়। বিএনপি মনে করে তাঁকে দলের আর দরকার নেই। তাই তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে সমশের মবিন চৌধুরীও যোগ দিচ্ছেন। ভারতের কংগ্রেস ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস গঠনের কথা উল্লেখ করে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, তৃণমূল বিএনপি নামটি তাঁর পছন্দ হয়েছে, এটিও নতুন দলে যাওয়ার একটি কারণ। সমশের মবিন ও তিনি তৃণমূল বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে যাচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, এমন আলোচনা আছে। কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হবে।

DayNight24

প্রকাশক: কাজল হাসান

যোগাযোগ: । info@daynight24.com

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 DayNight24 All Rights Reserved.